বিএনপির বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে এবং তা মোকাবিলায় দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বুধবার বিকালে ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। যশোর, ঝিনাইদহ ও নড়াইল জেলার নেতারা পৃথক তিন স্থানে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
কর্মশালায় তারেক রহমান বলেন, জনগণের বিশাল অংশ মনে করে ভালো কিছু হলে তা হবে বিএনপির নেতৃত্বেই। সেই কারণে আগামী নির্বাচনে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা বিএনপিরই সবচেয়ে বেশি। মানুষের এ আস্থা ধরে রাখতে হবে। এ দায়িত্ব দলের সব নেতাকর্মীর। জনগণের আস্থা নষ্ট হয়—এমন কিছু করা যাবে না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘সামনের পথ মোটেই মসৃণ নয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছেন, ‘পলাতক স্বৈরাচার অর্থনীতিসহ দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়ে গেছে।’ ফলে দেশ পুনর্গঠনের কাজটি সহজ নয়। কোনো ম্যাজিক দিয়ে এই কাজ হবে না। যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া প্রতিটি দলের সুদৃঢ় ঐক্যের মাধ্যমে দেশ গড়তে হবে। তবে বড় দল হিসেবে বিএনপির দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি।
মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে অবদানের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে তারেক রহমান বলেন, কোনো কোনো রাজনৈতিক দল মানুষকে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিয়ে বর্ডার ক্রস করে অন্য জায়গায় চলে যায়। আবার কোনো কোনো দল স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরোধিতা করে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শুধু স্বাধীনতার ঘোষণাই দেননি, তিনি যুদ্ধে নেতৃত্বও দিয়েছেন। আবার নিজে কোদাল হাতে খালখনন করে উৎপাদন বাড়িয়েছেন। দেশ গঠনে ভূমিকা রেখেছেন।
তারেক রহমান বলেন, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আপসহীন লড়াই করেছেন। ফলে দেখা যায়, সংকটকালে বিএনপিই দাঁড়িয়েছে। সে কারণেই অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ পেলে মানুষ বিএনপিকেই ভোট দিয়ে দেশ পরিচালনার সুযোগ দেয়।
নির্যাতিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘আপনারা প্রতিশোধ নিতে চান। আমিও প্রতিশোধ নিতে চাই। ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে পারলে আমাদের প্রতিশোধ নেওয়া হয়ে যাবে। প্রতিশোধ বলতে আমি ৩১ দফার বাস্তবায়নকেই বুঝি।
যশোরের একটি হোটেল চত্বরে সকালে এ কর্মশালা উদ্বোধন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। যশোরের কর্মশালায় দিকনির্দেশনা দেন দলনেতা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও এ বি এম মোশাররফ হোসেন প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম।
একইভাবে ঝিনাইদহ ও নড়াইল জেলায়ও কর্মশালা হয় এবং বিকেলে তিন জেলার অনুষ্ঠানে একযোগে যুক্ত হন তারেক রহমান। কর্মশালায় বক্তব্য দেন বিএনপির পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু চৌধুরী, যশোর জেলা কমিটির সদস্যসচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মজিদ, নড়াইল জেলা সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য প্রকৌশলী টি এস আইয়ুব, আবুল হোসেন আজাদ, মতিয়ার রহমান ফারাজী, সাবিরা নাজমুল মুন্নি প্রমুখ।