যশোরে রিক্তা বেগম (৪০) নামে একজন গৃহবধূর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (০৯ এপ্রিল) চৌগাছা উপজেলার ঢেঁকিপোতা গ্রামে স্বামীর বাড়ি থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার হয়।
এ ঘটনার পর নিহতের স্বামী, সতিন ও সতিনের ছেলে পলাতক রয়েছেন। পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে পুলিশের দাবি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামের রিক্তা খাতুনের সঙ্গে যশোরের চৌগাছা উপজেলার গদাধরপুর গ্রামের আজিজুর রহমানের বিয়ে হয়। তাদের তিনটি সন্তান রয়েছে।
আজিজুর রহমান বর্তমানে মালয়েশিয়ায় রয়েছেন।
এ অবস্থায় প্রায় এক বছর আগে রিক্তা খাতুন পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে চৌগাছা উপজেলার ঢেঁকিপোতা গ্রামের রোকনুজ্জামান রোকনকে বিয়ে করেন।
রোকনের প্রথম স্ত্রীর চার মাসের সন্তানসহ চারটি ছেলে সন্তান আছে।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার সকাল ১০টার দিকে ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় রিক্তা খাতুনকে পড়ে থাকতে দেখে লোকজন পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, রোকনুজ্জামানের দুই স্ত্রী বাড়ির দুই পাশে পৃথকভাবে বসবাস করেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর কারণে বাড়িতে প্রায় দ্বন্দ্ব লেগে থাকত। এ অবস্থায় রোকনুজ্জামান দ্বন্দ্ব এড়ানোর জন্য পাশের গ্রাম মস্মমপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে দ্বিতীয় স্ত্রীর জন্য বাড়ি নির্মাণ করছিলেন। এ কারণে প্রতিদিনই সেখানে যাওয়া-আসা করেন তারা।
বুধবার সকালে রিক্তা খাতুন নির্মাণাধীন বাড়িতে যান। সেখানে কাজকর্ম সেরে বাড়িতে গোসল করার জন্য ফেরেন। এ সময় প্রথম স্ত্রী বিলকিচ খাতুন মাংস কেনার জন্য বাজারের গিয়েছিলেন। বাড়িতে তখন অন্য ছেলেরা ছিল।
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ কাজ করছে।
ঘটনার পর থেকে স্বামী রোকনুজ্জামান, সতিন বিলকিচ খাতুন এবং ছেলে বরকত পলাতক রয়েছেন।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রোকনুজ্জামানের প্রথম স্ত্রীর ছেলে বরকতকে রক্তমাখা পোশাকে বাড়ি থেকে হন্তদন্ত হয়ে বের হতে দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে তারা ওই বাড়িতে ছুটে গিয়ে ঘরের মধ্যে রিক্তার গলাকাটা মরদেহ দেখতে পান। বিষয়টি তখনই চৌগাছা থানায় ফোন করে জানানো হয়।